বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যের ভিত্তিতেই সরকার হটানোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঠিক করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
বুধবার (২৭ এপ্রিল) রাজধানীর রাজারবাগে একটি রেস্টুরেন্টে নাগরিক ঐক্যের আয়োজনে ‘এই সরকারের অধীনে নির্বাচনকে না বলুন’
শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা জানান। সভায় বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি, গণসংহতি আন্দোলনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা অংশ নেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, আজ আলোচনার বিষয়বস্তু এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়া। এর সঙ্গে আমরাও একমত প্রকাশ করছি।
এই কথার সঙ্গে আরও যুক্ত করতে চাই আর এই সরকার না। বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন তো না-ই। দেশের যে পরিস্থিতি যে অবস্থা তাতে এখন সময় এসেছে সরকারকে না বলা।
তিনি বলেন, এই সরকারকে বিদায় দেবার জন্য আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হই। দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা,
ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনা ও এ দেশের মানুষের মালিকানা তাদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া। এর জন্য আমরা সব
গণতান্ত্রিক জাতীয়তাবাদী দেশপ্রেমিক শক্তি, রাজনৈতিক শক্তি, দল ও ব্যক্তিকে আহ্বান জানাব। তারা যেন এই স্বৈরাচারী, ফ্যাসিস্ট সরকারের হাত
থেকে এদেশের জনগণকে মুক্ত করে। সেজন্য আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলন ও সংগ্রামের জন্য যে কর্মসূচি প্রয়োজন হবে তা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেবো।
সভায় জেএসডির সভাপতি আসম আবদুর রব বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে যে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি হয়েছিল, আওয়ামী লীগ তা হত্যা করেছে।
আজকে ৫০ বছরেও দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়নি। একটা কথা পরিষ্কার আমরা এখানে যারা উপস্থিত আছি কেউ এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবো না। এতে কোনো দ্বিমত নেই।
তিনি বলেন, সরকার হটাতে আন্দোলনের কোনো বিকল্প পথ নেই। তবে এই সরকারকে বিদায়ের পর কোন সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে সেটা আমাদের আগেই ঠিক করতে হবে।
সেই সরকারটি অবশ্যই এমন সরকার হতে হবে যারা নিরপেক্ষ ও অবাধ একটি নির্বাচন করতে পারবে।
সেজন্যই জেএসডি মনে করে একটি জাতীয় সরকারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কারণ বর্তমান সরকার যেভাবে
প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে তাতে এটা সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সেজন্য একটা জাতীয় সরকার দরকার হবে।
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, এখানে যারা কথা বলেছেন সবার কথায় এই প্রত্যয় ব্যক্ত হয়েছে যে,
এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে না। আমরা যাবো না। এই সরকার চলে যাওয়ার পরে যে সরকার হবে সেটা তো নির্বাচিত সরকার নয়।
‘তাহলে এই সরকার কেমন হবে। কেউ জাতীয় সরকার বলছেন, কেউ তত্ত্বাবধায়ক সরকার বলছেন, কেউ বলছেন তদারকির সরকার।
এর থেকে সরকার পক্ষে মিডিয়াগুলো মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। তারা বলছে- ওরা সরকারের ব্যাপারে একমত নয়, মতপার্থক্য আছে, ওদের ঐক্য হবে না।
তাদের জন্য আমরা একটা মেসেজ দিতে চাই- আমরা যে নামেই ডাকি না কেন আমরা একটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই।
সেই সরকার পরবর্তীসময়ে নির্বাচনকে সুগম, স্বচ্ছ, গ্রহণযোগ্য করে তুলতে পারে।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য,গণঅধিকার পরিষদের ড. রেজা কিবরিয়া, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক,
গণ সংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, এলডিপির রেদোয়ান আহমেদ, শাহাদাত হোসেন সেলিম, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন,
ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবুল, লেবার পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ,
জাগপার খন্দকার লুতফুর রহমান, বিকল্পধারার নুরুল আমিন ব্যাপারী প্রমুখ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির আমীর খসুর মাহমুদ চৌধুরী,
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, আবদুল আউয়াল মিন্টু, শ্যামা ওবায়েদ, জহির উদ্দিন স্বপনসহ ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন।